ডিভাইসটি তৈরির মূল ধারণা হল, একে এমন রোগীদের বাসায় ইনস্টল করা, যারা এর আগে হৃদরোগে ভুগে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।
মানুষের পা থেকে হৃদযন্ত্রের গতিবিধি বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি শনাক্ত করে, এমন এক এআই চালিত ডিভাইস বানিয়েছে যুক্তরাজ্যের একটি স্টার্টআপ কোম্পানি।
কেমব্রিজভিত্তিক কোম্পানি ‘হার্টফেল্ট টেকনোলজিস’ বলছে, তাদের প্রযুক্তির মাধ্যমে হাসপাতাল থেকে মুক্তি পাওয়া হার্টের রোগীদের খালি পা ফুলে গেছে কি না, তা মনিটর করা যায়, যা হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাব্য লক্ষণ।
পা ফুলে যাওয়ার এ ঘটনাটি ‘পেরিফেরাল শোথ’ নামেও পরিচিত, যা সাধারণত হৃদক্রিয়া ব্যর্থ হওয়ার এক থেকে দুই সপ্তাহ আগে ঘটে থাকে। তবে, প্রায়ই তা রোগীরা তা বুঝতে পারেন না।
হার্টফেল্ট টেকনোলজিসের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত ডিভাইসটি রোগীর বাসায় ইনস্টল করা যেতে পারে, যেখানে তিনি যতবার এর পাশ দিয়ে হেটে যাবেন, ততবারই স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার পা মনিটর করবে ডিভাইসটি।
ডিভাইসটি তৈরির মূল ধারণা হল, একে এমন রোগীদের বাসায় ইনস্টল করা, যারা এর আগে হৃদরোগে ভুগে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। স্টার্টআপ কোম্পানিটি আরও দাবি করেছে, এ ডিভাইসের মাধ্যমে হাসপাতালে পুনরায় ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি কমে আসতে পারে তিন চতুর্থাংশ পর্যন্ত।
“সিস্টেমটি বাসায় রাখা যায়, যা পরোক্ষভাবে রোগীর পায়ের গতিবিধি মনিটর করে, যখন তিনি এর ক্যামেরার পাশ দিয়ে হেটে যান,” বলেন হার্টফেল্ট টেকনোলজিসের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ওরাইন চাউসিয়াক্স।
“এটি এমনভাবে নকশা করা, যেখানে রোগীকে কিছু করতেও হয় না, পরতেও হয় না বা মনে রাখতেও হয় না। আমরা বিশ্বাস করি, অনিয়মিত রোগীদের জন্য এটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হতে পারে।”
হার্ট ফেইলিউরে ভোগা রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ ওষুধ আছে। তবে, একবার হাসপাতাল থেকে মুক্তি পেলে তারা যে সঠিক ওষুধ নিচ্ছেন, তা নিশ্চিত করতে ক্রমাগত মনিটরিং প্রয়োজন।
জুতার বাক্সের মতো দেখতে এ ডিভাইসে ব্যবহার করা হয়েছে একটি অপটিকাল সেন্সর ও ৩ডি ক্যামেরা।
ডিভাইসটির প্রথম প্রজন্মের মডেলে রাসবেরি পাই কম্পিউটারের ওপর নির্ভর করার পর নিজেদের হার্ডওয়্যার আপগ্রেড করেছে হার্টফেল্ট টেকনোলজিস, যেখানে ‘এক্সবক্স ওয়ান’-এ থাকা ‘মাইক্রোসফট কাইনেক্ট’ ক্যামেরা বসিয়েছে কোম্পানিটি।
ডিভাইসটি এখনও নিয়ন্ত্রকদের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে, যা ইউরোপের ‘মেডিকাল ডিভাইস রেগুলেশন (এমডিআর)’ নীতিমালায় পড়ে। কোম্পানির তথ্য অনুসারে, ডিভাইসটি এরইমধ্যে গোটা বিশ্বের ‘বেশ কিছু জায়গায়’ পরীক্ষা করা হয়েছে।
“যেহেতু আমাদের ডিভাইসে রোগীর ইনপুট লাগে না, তাই এর ডেটা নিয়মিত ও প্রচলিত ব্যবস্থার চেয়ে নির্ভুলভাবে সংগ্রহ করা যায়,” বলেছে কোম্পানিটি।
“ডাক্তারদের বেলায়, রোগীদের ভালোমানের ডেটার সম্ভাব্য মানে, রোগীদের দীর্ঘ সময় সুস্থতার সঙ্গে বেচে থাকা ও হাসপাতালে আবার ভর্তি হওয়ার মতো ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া।”
তথ্য সংগ্রহে এবং ব্যাবস্থাপনায়: tonmoykunduit
0 Comments