ফেসবুক এবার গোপন নজরদারি করছে তার প্রতিযোগীদের ওপর

২০১৬ সালের জুনে মার্ক একটি ইমেইলে বলেন, স্ন্যাপচ্যাট তাদের সিস্টেম এনক্রিপট (যে পদ্ধতির মাধ্যমে তথ্য গোপন কোডে রূপান্তরিত হয় যা তথ্যের প্রকৃত অর্থ লুকিয়ে রাখে) করার কারণে অ্যাপটির অভ্যন্তরীণ কোনো তথ্য ফেসবুকের কাছে নেই। তাদের সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য তথ্য পেতে একটি নতুন উপায় বের করা গুরুত্বপূর্ণ।

ফেসবুক

ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের নেতৃত্বাধীন মেটার প্ল্যাটফর্মগুলো স্ন্যাপচ্যাট, ইউটিউব এবং অ্যামাজন ব্যবহারকারীদের তথ্য গোপনে নজরদারি করছে বলে অভিযোগ করে নতুন তথ্য প্রকাশ করেছে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ফেডারেল আদালত।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চের বরাত দিয়ে বুধবার এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, ফেসবুক ২০১৬ সালে ‘ঘোস্টবাস্টারস’ নামে একটি গোপন প্রজেক্ট চালু করেছিল যাতে স্ন্যাপচ্যাট ও এর সার্ভার ব্যবহারকারীদের মধ্যে নেটওয়ার্ক ট্রাফিক এনক্রিপ্ট এবং ডিক্রিপ্ট করা যায়।

স্ন্যাপচ্যাটের ভূতের (ঘোস্ট) মতো লোগোর সঙ্গে মিল রেখে ফেসবুক এটির নাম দিয়েছে ‘প্রজেক্ট ঘোস্টবাস্টারস’।

ফেসবুক


আদালতের নথি অনুসারে, ঘোস্টবাস্টারস প্রজেক্টটি স্ন্যাপচ্যাটের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা অর্জন ও ব্যবহারকারীর আচরণ বোঝার জন্য তৈরি করা হয়েছে।

নথিতে প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা করা সে সময়ের অভ্যন্তরীণ ফেসবুক ইমেইলগুলোও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ২০১৬ সালের জুনে মার্ক এমন একটি ইমেইলে বলেন, স্ন্যাপচ্যাট তাদের সিস্টেম এনক্রিপট (যে পদ্ধতির মাধ্যমে তথ্য গোপন কোডে রূপান্তরিত হয় যা তথ্যের প্রকৃত অর্থ লুকিয়ে রাখে) করার কারণে অ্যাপটির অভ্যন্তরীণ কোনো তথ্য ফেসবুকের কাছে নেই।

তাই তাদের সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য তথ্য পেতে একটি নতুন উপায় বের করা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন মার্ক। এর জন্য একটি কাস্টম সফটওয়্যার তৈরির কথা জানান তিনি।

এর পরিপ্রেক্ষিতেই পরবর্তীতে ফেসবুকের প্রকৌশলীরা ঘোস্টবাস্টারস তৈরি করেন। পরে অ্যামাজন এবং ইউটিউবকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রকল্পটি প্রসারিত করা হয়ে।

গত বছর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পায় যা বিশ্বের জনসংখ্যার ০.৯ শতাংশ বৃদ্ধিকে ছাড়িয়ে গেছে।

বিশ্বে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সক্রিয়ভাবে ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৫০০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। এ সংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬২.৩ শতাংশ।

বুধবার প্রকাশিত এক জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। খবর এএফপির।

মিডিয়া পর্যবেক্ষণ সংস্থা মেল্টওয়াটার এবং সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থা উই আর সোশ্যালের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পায় যা বিশ্বের জনসংখ্যার ০.৯ শতাংশ বৃদ্ধিকে ছাড়িয়ে গেছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষকে সামাজিক নেটওয়ার্ক মেটার ফেসবুক ব্যবহার করে। এটি ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ২.১৯ বিলিয়ন। মেটার ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১.৬৫ বিলিয়ন। ব্যবহারের দিকে এর পরের অবস্থানে থাকা সামাজিক মাধ্যম হচ্ছে টিকটক। বিশ্বের প্রায় ১.৫৬ বিলিয়ন মানুষ এ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে।

প্রতিদেনে সতর্ক করে বলা হয়, স্বয়ংক্রিয় অ্যাকাউন্ট বা বিভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করার কারণে এসব মিডিয়া ব্যবহার করা সুনির্দিষ্ট লোকের সংখ্যা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

প্রতিবেদনটি ডিজিটাল কনসালটেন্সি কোম্পানি কেপিওস’র সংকলিত পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। সূত্র: বাসস

ফেসবুক


ক্যালিফোর্নিয়ার আদালতের তথ্য অনুসারে, ফেসবুকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভদের একটি দল এবং প্রায় ৪১ জন আইনজীবী প্রজেক্ট ঘোস্টবাস্টারে কাজ করেছেন, তবে ফেসবুকের কিছু কর্মী এ প্রকল্পের বিপক্ষে ছিলেন। তারা এটি নিয়ে তাদের উদ্বেগও প্রকাশ করেন।


তথ্য সংগ্রহে এবং ব্যাবস্থাপনায়: tonmoykunduit

Post a Comment

0 Comments