শৈশব চুরি করে নিচ্ছে সোস্যাল মিডিয়া

 

বাচ্চাদের ব্রেইনে সোস্যাল মিডিয়ার ক্ষতি

"আমাদের শৈশব চুরি করা হয়েছে," এমনটাই বলছেন রিকি শ্লট নামের একজন 21 বছর বয়সী ব্যক্তি যিনি 11 বছর বয়স থেকে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করছেন। ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি কিশোর-কিশোরীদের মানসিক সুস্থতার উপর ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই অ্যাপগুলির প্রতিকূল প্রভাবগুলি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে, বিবিসিকে তাদের অ্যালগরিদমগুলির জটিল কার্যকারিতাগুলি অনুসন্ধান করতে প্ররোচিত করেছে। তদন্তের লক্ষ্য ছিল কীভাবে এই অ্যালগরিদমগুলি সোশ্যাল মিডিয়াকে একটি সত্য আসক্তিতে পরিণত করেছে এবং কীভাবে ব্যক্তিরা এই আসক্তিমূলক আচরণের দ্বারা সৃষ্ট চ্যালেঞ্জগুলির সাথে মোকাবিলা করছে তার উপর আলোকপাত করা।

সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার এখন শুধু বড়দের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় এখন সবকিছুই ধরাছোঁয়ার মধ্যে। ফলে শিশু-কিশোররাও ঝুঁকে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে। সমস্যা হল, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের তেমন কোনো নিয়ম-নীতি না থাকায় ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, ইন্সটাগ্রামের মতো জনপ্রিয় সব প্লাটফর্মে রীতিমতো আসক্ত হয়ে পড়েছে তারা। টিকটক, শর্টস আর রিল তো ব্যাধির আকার ধারণ করেছে।

 

শিশুদের ওপর যেভাবে প্রভাব ফেলছেঃ

বিভিন্ন সামাজিক নেটওয়ার্ক ব্যবহারে মানুষ যেমন উপকৃত হচ্ছে, তেমনি এসবের অপব্যবহারে ক্ষতিকর প্রভাবও পড়ছে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে শিশুদের ক্ষেত্রে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্রাউজিং, চ্যাটিংয়ে তাদের পড়ালেখার ক্ষতি যেমন হচ্ছে, তেমনি মানসিকভাবেও ক্ষতির মুখে পড়ছে তারা। নৈতিক অবক্ষয় তো আছেই। সঙ্গে বাড়াচ্ছে বিরক্তি, উদ্বেগ এবং আত্মসম্মানবোধের অভাব।

 সোশ্যাল মিডিয়া শিশুদের ওপর কেমন প্রভাব ফেলে সে বিষয়ে কয়েক বছর আগে বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি সমীক্ষা করা হয়েছিল। সেখানে প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা গেছে, অর্ধেক অভিভাবক মনে করেন, ফেসবুক, টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়া শিশুদের নৈতিক উন্নতিতে বাধা সৃষ্টি করে। তাদের বেড়ে ওঠায় পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

শিশুদের ওপর যেভাবে প্রভাব ফেলছে

পিউ রিসার্চ সেন্টারঃ

বিখ্যাত আমেরিকান গবেষণা সংস্থাপিউ রিসার্চ সেন্টারতাদের এক সমীক্ষা শেষে জানায়, ৯৫ শতাংশ তরুণ-তরুণী এখন স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে যার মধ্যে প্রায় ৪৫ ভাগ সারাক্ষণ অনলাইনে থাকে। এখন এই ব্যবহার কমানো চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে অভিভাবকদের জন্য। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার কোনো কোনো ব্যবহারকারীর মধ্যে হতাশা উদ্বিগ্নতা তৈরি করছে। 


পিউ রিসার্চ সেন্টার

 সোশ্যাল মিডিয়ায় সবধরনের তথ্যই সামনে চলে আসে। যা নিয়ন্ত্রণ করা মোটেও সম্ভব নয়। যে কারণে শিশুরা যেকোনো সময় তাদের বয়সের তুলনায় অনুপযুক্ত এবং ক্ষতিকারক কনটেন্ট বা বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা লাভ করছে। যা তাদের চিন্তা ভাবনাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যমে বাড়ছে সাইবারবুলিংয়ের মতো ঘটনা। এটি শিশুদের মনে যেমন ভয় লজ্জা ছড়ায়, তেমনি তাদের ওপর অনাকাঙ্ক্ষিত প্রভাব ফেলতে পারে।

 কিছু গবেষণা বলছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত হয়ে পড়লে শিশুরা তাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারে না। এতে পড়াশোনার মারাত্মক ক্ষতি হয়। অসময়ে খাওয়া-দাওয়া স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। অত্যধিক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে শিশুদের আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্ক বিকাশের ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে, ক্রীড়া সংস্কৃতি চর্চায়ও বিরূপ প্রভাব ফেলে, তাদের জানার পরিধি জ্ঞানচর্চাকে সংকুচিত করে।

 সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে শিশুদের পড়ালেখায় কীভাবে প্রভাব ফেলে সে বিষয়ে শিশু মনোবিজ্ঞানী কেট ইশলেম্যান বলেন, যদি বাচ্চাদের সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করে তাদের বাড়ির কাজ করতে বলা হয়, তাহলে লক্ষ্য করবেন তারা বাবা-মায়ের প্রতি বিরক্তি বা হতাশা প্রকাশ করে। বিষয়টি এমন যে, তাদের এমন কিছু করতে বলা হচ্ছে যা তারা করতে চায় না এবং এমন কিছু করতে বারণ করা হচ্ছে, যা তারা উপভোগ করে।

 

কারা বেশি সম্পৃক্ত?

বেশিরভাগ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে বয়স কমপক্ষে ১৩ হতে হয়। তবে ভয়ংকর তথ্য হলো, এখন ১০ থেকে ১২ বছরের ৫০ শতাংশ শিশুই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। থেকে বছর বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে এই হার ৩৩ শতাংশ। শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা মিশিগানের সিএস মোট হাসপাতালের করা এক সমীক্ষায় উঠে আসে এই তথ্য।   

কারা বেশি সম্পৃক্ত

বিশেষজ্ঞরা যা বলেনঃ

বাংলাদেশের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ নিউজ টোয়েন্টিফোরকে বলেন, ‘অতিরিক্ত সোশ্যাল সাইট নির্ভরতা মানেই হলো অতিরিক্ত ডিভাইস নির্ভরতা। এতে শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবার পাশাপাশি শিশুটি মুটিয়েও যায়। এছাড়া তারা কুরুচিপূর্ণ সাইটে ঢোকার সুযোগ পায়। এতে চারিত্রিক অধঃপতন ঘটার আশঙ্কা থাকে। অভিভাবকদের উচিত, ডিভাইস থেকে দূরে রেখে শিশুদেরকে নিয়মিত খেলাধুলার অভ্যাস করা।

 বাংলাদেশ আই হাসপাতালের বিশিষ্ট ফ্যাকো এবং গ্লুকোমা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘শিশুরা যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার করে তখন তা তাদের চোখে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। ক্ষুদে ডিভাইসের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতায় তাদের চোখের পাওয়ার কমে যায়, যাকে বলেমায়োপিয়া এটি ছাড়াও চোখের ক্ষীণ দৃষ্টিজনিত নানা রোগ দেখা দেয়। ফলে দেখা যায়, প্রাইমারি লেভেলেই পাওয়ারফুল চশমা পড়ে অনেক শিশু।

 তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘পড়াশোনার বা প্রয়োজনের বাইরেও কিছু সময় তারা অভিভাবকের সমন্বয়ে সামাজিক সাইটগুলোতে থাকতে পারে। তবে তা যেন মাত্রাতিরিক্ত না হয়। শিশুদের হাতে স্মার্ট ফোন তুলে দেওয়া মোটেই ঠিক নয়।

 ২০১৭ সালে রয়াল সোসাইটি অব পাবলিক হেলথ একটি জরিপ চালায় ১১ থেকে ১৫ বছর বয়স্ক দেড় হাজার কিশোর-কিশোরীর ওপর।

 এতে দেখা যায় স্ন্যাপচ্যাট এবং ইনস্টাগ্রাম তাদের মনে সবচেয়ে বেশি হীনমন্যতা এবং দুশ্চিন্তা সৃষ্টি করে। ১০ জনের মধ্যে জন বলেছে ইনস্টাগ্রামের কারণে তাদের নিজেদের দেহ নিয়ে মন খারাপ হয়েছে। ১৪ থেকে ১৪ বছর বয়সের তরুণতরুণীদের অর্ধেকই বলেছে ফেসবুকের কারণে তাদের মানসিক দুশ্চিন্তা অশান্তি বেড়ে গেছে।

শিশু কল্যাণ বিশেষজ্ঞ

 দু-তৃতীয়াংশ উত্তরদাতা বলেছে, ফেসবুকের কারণে সাইবার বুলিইং বা অনলাইনে অপমান-হয়রানি করার প্রবণতা আরো গুরুতর আকার নিয়েছে।

শিশু-কিশোরদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের কুফল নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বেশ কিছু চিকিৎসক শিশু কল্যাণ বিশেষজ্ঞ।

 ব্রিটেনের একজন চিকিৎসক রঙ্গন চ্যাটার্জী বলছেন, কিশোরকিশোরীদের মধ্যে মানসিক সমস্যা এবং তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের মধ্যে যে একটা সম্পর্ক আছে তার অনেক প্রমাণ তিনি পেয়েছেন।

 

শিশু কল্যাণ বিশেষজ্ঞঃ

সম্প্রতি একদল মার্কিন শিশু কল্যাণ বিশেষজ্ঞ ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের কাছে একটি চিঠি লেখেন। এতে তারা 'মেসেঞ্জার কিডস' নামে বাচ্চাদের মেসেজিং অ্যাপটি বন্ধ করে দেবার আহ্বান জানান।

মেসেঞ্জার কিডস


তারা
বলেন, ১৩ বছরের কম বয়েসীদেরকে এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করতে উৎসাহিত করারটা দায়িত্বজ্ঞানহীন।

 বর্তমানে মোবাইল খুবই প্রয়োজনীয় অপরিহার্য একটি প্রযুক্তি। তবে ক্রমাগত-অত্যধিক ব্যবহার এর প্রতি আসক্তি তৈরি করে। টিভি, মোবাইল গেম বা যেকোনো ধরনের ভার্চুয়্যাল বিনোদনের সময় মস্তিষ্কের কোষ থেকে ডোপামিন নিউরোট্রান্সমিটার নিঃসৃত হয়। এই ডোপামিন আমাদের মনে এক ভালো লাগার অনুভূতি সঞ্চার করে। ফলে অতি সহজেই আমরা আসক্ত হয়ে পড়ি।


শিশুর মনযোগ এখন মোবাইলেঃ 

মুঠোফোনের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার শৈশবে সামাজিক এবং মানসিক বিকাশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। যেসব শিশু বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ক্রিয়াকলাপ যেমন খেলাধুলা, দৌড় বা সাইকেল চালানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকে, তারা মোবাইল বা ভিডিও গেমে আসক্ত হয় বেশি। এতে বাধাগ্রস্ত হয় তাদের নানা রকম দক্ষতার বিকাশ। পরে কোনো কিছুতে মনোনিবেশ এবং বাস্তব জীবনে কার্যকর যোগাযোগ গড়ে তোলার ক্ষমতাও বিঘ্নিত হয়।

শিশুর মনযোগ এখন মোবাইলে


পরিবার থেকে একটু সচেতন থাকলে সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব। শিশুদের স্মার্টফোন আসক্তি কমাতে বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন। করণীয়

 

মোবাইল ফোনও একটি অতিপ্রয়োজনীয় জিনিসঃ

 মনে রাখবেন, বাড়ির খুব দরকারি যন্ত্রগুলোর মতো (ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ইত্যাদি) মোবাইল ফোনও একটি অতিপ্রয়োজনীয় জিনিস। এটা শিশুর খেলার সামগ্রী নয়। শিশুদের বুঝিয়ে বলুন টিভি বা মোবাইলের আসক্তির খারাপ দিকগুলো।

 ·       শিশুদের একাকিত্ব দূর করার চেষ্টা করুন। নানা ধরনের অ্যাকটিভিটি প্ল্যান করুন। যেমন নাচ, গান, অবৃত্তি, বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখান। সমবয়সী শিশুদের সঙ্গে মিশতে খেলতে দিন।

 ·       শিশুদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারলে খুব ভালো। ছোটবেলা থেকে রোজ রাতে শোবার আগে সন্তানকে যদি বই থেকে গল্প পড়ে শোনান, তাহলে তার মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠবে।

 ·       মাঝেমধ্যে তাদের নিয়ে খেলাধুলা করতে বা ঘুরতে যান। শৈশবকে উপভোগ্য করে তুলুন। যারা শহরে থাকেন, তারা সপ্তাহে এক দিন বা মাসে দুই দিন শিশুকে নিয়ে প্রকৃতির কাছে যেতে পারেন।

 ·       ইন্টারনেটে কী ধরনের ভিডিও শিশুরা দেখছে, লক্ষ রাখুন।

 ·       শিশুদের প্রযুক্তি ব্যবহার স্ক্রিন টাইমের সময় নির্দিষ্ট করে দিতে হবে।

 ·       শিশুদের ঘরের কাজে দায়িত্ব দিন। সংসারের ছোট ছোট কাজে সহযোগিতা করতে উৎসাহিত করুন।

 ·       শিশুকে খাওয়ানোর সময় বা ঘুমোতে যাওয়ার আগে মোবাইল গেম, কার্টুন দেখানোর বা গ্যাজেটের অভ্যাস করবেন না। সময় গল্প শোনানোর অভ্যাস করুন।

 নিজেদের ব্যস্ততার জন্য সন্তানকে মোবাইল গেমে, ভিডিওতে আসক্ত করা অপরাধের শামিল। অনেক অভিভাবক নিজেও ফেসবুক বা টিভি সিরিয়াল, গেম বা গ্যাজেটে আসক্ত। সন্তানকে গুণগত সময় দিন।

 

সোশ্যাল মিডিয়া: তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ

আজকাল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ফেসবুকে, খবর, ছবি এবং ভিডিওর মতো অনেক অনুপযুক্ত জিনিস শেয়ার করা হচ্ছে। এটি তরুণদের জন্য ভাল নয় কারণ এটি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও লোকেরা কথা বলে এবং এমন কিছু করে যা তরুণদের জন্য উপযুক্ত নয়। এটি তাদের অবাস্তব প্রত্যাশা করতে পারে এবং এমন কিছু করতে পারে যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভাল নয়। এটা মেয়েদের জন্য বিশেষ করে খারাপ। যখন অল্পবয়সীরা সোশ্যাল মিডিয়া অনেক বেশি ব্যবহার করে, তখন এটি তাদের দু: খিত এবং একাকী বোধ করতে পারে এবং তারা এমন কিছু করতে পারে যা নিজেদের বা অন্যদের ক্ষতি করে। সোশ্যাল মিডিয়ার অত্যধিক ব্যবহার তরুণদের জন্য স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে, যেমন দু:খিত এবং উদ্বিগ্ন বোধ করা।

তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ

 তরুণরাও এমন কিছু পোস্ট করার জন্য অনেক চাপ অনুভব করে যা মনোযোগ আকর্ষণ করবে এবং তাদের সুন্দর দেখাবে। এটি তাদের উদ্বিগ্ন এবং চাপ অনুভব করতে পারে। কখনও কখনও যুবকরা সোশ্যাল মিডিয়াতে এত বেশি সময় ব্যয় করে যে তারা পর্যাপ্ত ঘুম পায় না, যা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য সত্যিই খারাপ। অল্পবয়সীরা যখন দেখে যে তাদের বন্ধুরা সোশ্যাল মিডিয়াতে কী করছে, তখন তারা ঈর্ষান্বিত এবং দুঃখিত হতে পারে কারণ তারা মনে করে তাদের নিজেদের জীবন ততটা ভালো নয়। কিন্তু তারা বুঝতে পারে না যে লোকেরা শুধুমাত্র ভাল জিনিসগুলি সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করে খারাপ জিনিস নয়। তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় খারাপ জিনিস শেয়ার করা বন্ধ করতে সরকারের উচিত নিয়ম তৈরি করা। কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ভালোভাবে ব্যবহার করা যায় সে সম্পর্কে অভিভাবকদের তাদের বাচ্চাদের সাথে কথা বলা উচিত। এবং স্কুলগুলিকে সোশ্যাল মিডিয়ার অত্যধিক ব্যবহার করার বিপদ সম্পর্কে  শিক্ষার্থীদের শেখানো উচিত।

 

সোশ্যাল মিডিয়ার উত্থান-পতনঃ 

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা বাচ্চাদের জন্য ভাল হতে পারে কারণ এটি তাদের বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখতে এবং নতুন জিনিস শিখতে সাহায্য করে। এটি তাদের লোকেদের সাথে কথা বলা এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে আরও ভাল করে তুলতে পারে।

 

সোশ্যাল মিডিয়ার উত্থান-পতন

সামাজিক মিডিয়া ব্যবহার করার অন্যান্য সুবিধাগুলি অন্তর্ভুক্ত করতে পারেঃ 

  • ·       সংগঠিত করা বা একটি আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা কারণগুলির জন্য তারা যত্নশীল।
  • ·       বিভিন্ন আকারে সৃজনশীলতা প্রকাশ করা।
  • ·       অনুরূপ আগ্রহ বা ভিন্ন দৃষ্টিকোণ সহ অন্যদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বন্ধু গোষ্ঠীগুলিকে প্রসারিত করা।
  • ·       স্বেচ্ছাসেবক বা সম্প্রদায়ে নিযুক্ত হওয়ার সুযোগ সন্ধান করা।
  • ·       স্কুল অ্যাসাইনমেন্ট সম্পূর্ণ করতে সহপাঠীদের সাথে সংযোগ করা।

 

সোশ্যাল মিডিয়ার ডাউনসাইডসঃ 

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা বাচ্চাদের মাঝে মাঝে দুঃখ, চিন্তিত এবং একা বোধ করতে পারে। এটি তাদের মনে করতে পারে যে তাদের বন্ধুরা যা করছে তা তাদের করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করার সময় বাচ্চাদের সতর্কতা অবলম্বন করা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে।

 

সোশ্যাল মিডিয়ার ডাউনসাইডসঃ

অনলাইনে তর্জন করা, ফোনে অত্যধিক সময় ব্যয় করা, উদ্বিগ্ন এবং দুঃখ বোধ করা এবং বিছানায় ফোন ব্যবহার করার কারণে ভাল ঘুম না হওয়া সবই শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। স্ক্রিন টাইম সীমিত করা এবং তাদের সুস্থতা রক্ষা করার জন্য স্বাস্থ্যকর অভ্যাসকে অগ্রাধিকার দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

 

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার পরিবর্তন করার টিপসঃ 

আপনার সন্তানকে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। আপনার বাড়িতে সামাজিক মিডিয়া ব্যবহার সীমিত করতে এই টিপস অনুসরণ করুন।

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার পরিবর্তন করার টিপস


আপনার সন্তান সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে কতটা সময় ব্যয় করে তা দেখতে একটি সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং অ্যাপ ইনস্টল করুন৷

সন্ধ্যায় বা বাড়ির কাজের সময় একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে অ্যাপগুলি ব্লক করার জন্য সীমাবদ্ধতা তৈরি করুন।

ডিভাইস-মুক্ত পারিবারিক সময় পরিকল্পনা করুন। ডিনারে হোক বা সন্ধ্যায়, প্রত্যেকেরই তাদের ডিভাইস বন্ধ করে একে অপরের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।

আপনার বাচ্চারা পর্যাপ্ত ঘুম পায় তা নিশ্চিত করতে রাতে শোবার ঘর থেকে ডিভাইসগুলি সরান।

বাচ্চাদের তাদের ডিভাইস থেকে দূরে রাখতে এবং অন্যদের সাথে তাদের সামাজিকীকরণের জন্য ক্রিয়াকলাপগুলির পরিকল্পনা করুন, যেমন: B. একটি স্থানীয় সংস্থার জন্য স্বেচ্ছাসেবক হয়ে বা একটি ক্রীড়া দলে যোগদানের মাধ্যমে।

 

পিতামাতা যা করতে পারেনঃ

পিতামাতার উচিত তাদের ফোনগুলি রান্নাঘরে নিয়ে যাওয়া এবং তাদের বেডরুমে না রাখা। এটি শুধুমাত্র বাচ্চাদের জন্যই নয়, বড়দের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। ঘুমানোর আগে এবং রাতে ফোন, ট্যাবলেট এবং কম্পিউটারের মতো ইলেকট্রনিক্স ব্যবহার করলে ঘুমাতে অসুবিধা হতে পারে। তাই ঘুমানোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে এবং রাতে এগুলি ব্যবহার করা বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।

 

পিতামাতা যা করতে পারেন

পিতামাতারা তাদের সন্তানদের ঘুমানোর আগে পর্দায় কম সময় কাটাতে সাহায্য করার জন্য অন্যান্য উপায়ও চেষ্টা করতে পারেন।

বাচ্চাদের টেকনোলজি সম্পর্কে শেখান এবং তারা যখন যথেষ্ট বয়সী হয় তখন কীভাবে এটিকে দায়িত্বের সাথে ব্যবহার করতে হয়। তারা কীভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করে সে সম্পর্কে তাদের সাথে কথা বলুন এবং তাদের বলুন যে তাদের প্রয়োজন হলে তারা সাহায্য চাইতে পারেন। অন্যান্য অভিভাবকদের সাথে কথা বলুন এবং রাতে একসাথে ফোন ব্যবহার করার নিয়ম তৈরি করুন। মনে রাখবেন, আপনি একমাত্র অভিভাবক নন যিনি ফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে নিয়ম সেট করেন৷ আপনার বাচ্চাদের দেখান কিভাবে দায়িত্বের সাথে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে হয় তা নিজে কম ব্যবহার করে এবং আপনি কীভাবে এটি রাতে ব্যবহার করেন সে সম্পর্কে সতর্ক থাকুন। আমরা যত বেশি জানব, তত ভালো করে আমরা আমাদের ঘরগুলিকে আমাদের শিশুদের জন্য নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর করতে পারব।

পিতামাতা যা করতে পারেন

তথ্য সংগ্রহে এবং ব্যাবস্থাপনায়: tonmoykunduit

Post a Comment

0 Comments