অনলাইনভিত্তিক
জনপ্রিয় অর্থ লেনদেন (পেমেন্ট)
ব্যবস্থা পেপ্যাল বাংলাদেশে চালু হচ্ছে কি
না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা
রয়ে গেছে। দীর্ঘদিন
ধরে সরকারি–বেসরকারি পর্যায়ে
এ নিয়ে আলাোচনা থাকলেও
কবে আসবে পেপ্যাল—এই
প্রশ্নের উত্তর এখনো অধরাই। গোটা দুনিয়ায়
অনলাইনে অর্থ লেনদেনের মাধ্যম
হিসেবে পেপ্যাল প্রথম পছন্দ ফ্রিল্যান্সারদের। বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররাও
পেপ্যাল চালু করার কথা
বলছেন বছরের পর বছর
ধরে। দেশের পরিবর্তিত
পরিস্থিতিতে কী ভাবছেন তাঁরা,
তা শোনা যাক।
বাংলাদেশি
ফ্রিল্যান্সারদের জন্য পেপ্যাল জরুরি। কারণ, এটি
আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের কাছ থেকে পেমেন্ট
গ্রহণের একটি জনপ্রিয় ও
নির্ভরযোগ্য মাধ্যম। পেপ্যাল
না থাকায় তাঁরা বৈশ্বিক
বাজারে প্রবেশ এবং নিরাপদে
পারিশ্রমিক পাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত
হচ্ছেন। এ ছাড়া
মার্কেটপ্লেসের বাইরের কাজের সুযোগও
পেপ্যাল না থাকায় সীমিত
হয়ে পড়েছে।
ফ্রিল্যান্সারদের
জন্য পেপ্যাল জরুরি
তৌহিদুর
রহমান, ফ্রিল্যান্সার ও উদ্যোক্তা, ঢাকা
পেপ্যাল
চালু হলে ব্যবসার সুযোগও
উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। কারণ,
ফ্রিল্যান্সাররা সরাসরি গ্রাহকের সঙ্গে
ও অন্যান্য সেবাও অনলাইনে প্রদান
করতে পারবে। পেপ্যাল
না থাকায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে
আমাদের দেশের একটি নেতিবাচক
ধারণা তৈরি হয়, যা
আমাদের পেশাদারত্বে প্রভাব ফেলে।
পাশাপাশি দেশও অনেক বৈদেশিক
মুদ্রা আয় থেকে বঞ্চিত
হচ্ছে।
পেপ্যাল
বাংলাদেশে এলে ফ্রিল্যান্সারদের পারিশ্রমিক
নেওয়া অনেক সহজ হয়ে
যাবে। অর্থ লেনদেনের
যে মাধ্যমগুলো বাংলাদেশে রয়েছে, অনেক গ্রাহক
সেগুলো চেনেন না।
ফলে ফ্রিল্যান্সারদের পেমেন্ট নিতে ভোগান্তিতে পড়তে
হয়। পেপ্যাল সারা
বিশ্বে পরিচিত হওয়ায় অধিকাংশ
গ্রাহক এই মাধ্যমে পারিশ্রমিক
দিতে চান।
অর্থ লেনদেনের যে মাধ্যমগুলো বাংলাদেশে
রয়েছে, অনেক গ্রাহক সেগুলো
চেনেন না
এমরাজিনা ইসলাম, ফ্রিল্যান্সার ও প্রতিষ্ঠাতা, কাজ ৩৬০
এ ছাড়া ‘ড্রপশিপিং’ ব্যবসা
যাঁরা করেন, তাঁদের জন্য
পেপ্যাল প্রয়োজনীয়। অনেক ভালো
ভালো মাধ্যম ও মার্কেটপ্লেস
আছে, যেগুলোতে কাজ করে পারিশ্রমিক
নেওয়ার উপায় হলো পেপ্যাল। বাংলাদেশে পেপ্যাল
না থাকায় ওই সব
জায়গায় এ দেশের পেশাজীবীরা
কাজ করতে পারেন না।
বিশ্বের
প্রায় ২০০টি দেশে অনলাইনে
পারিশ্রমিক গ্রহণের জন্য সেরা মাধ্যম
পেপ্যাল। অধিকাংশ দেশে
পেপ্যাল চালু থাকায় বাংলাদেশ
থেকে যখন আমরা বিদেশি
কোনো গ্রাহক বা ক্লায়েন্টকে
পেমেন্ট করতে বলি, তাঁদের
প্রথম পছন্দ পেপ্যাল।
পেপ্যাল ছাড়াও অন্যান্য মাধ্যম
থাকলেও ক্লায়েন্টদের প্রথম পছন্দ পেপ্যাল
হওয়ায় তাঁরা অন্য মাধ্যমে
লেনদেন করতে অনেক ক্ষেত্রেই
অস্বীকার করেন।
প্রায়
২০০টি দেশে অনলাইনে পারিশ্রমিক
গ্রহণের জন্য সেরা মাধ্যম
পেপ্যাল
সুবীর
নকরেক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা,
নকরেক আইটি ইনস্টিটিউট, মধুপুর,
টাঙ্গাইল
ক্লায়েন্টরা
পেমেন্টের ক্ষেত্রে নির্ভার ও বিশ্বস্ত মাধ্যম
খুঁজে থাকেন। আমাদের
দেশে এক যুগ ধরে
পেপ্যাল চালু করার দাবি
জানানো হচ্ছে। এটি
চালু হলে দেশের লাখ
লাখ ফ্রিল্যান্সার সরাসরি দ্রুত অর্থ
গ্রহণ করতে পারবে।
এ মাধ্যমে পেমেন্ট গ্রহণ করার খরচও
অন্য মাধ্যমের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম। লাখ লাখ
ফ্রিল্যান্সারের প্রাণের দাবি পেপ্যাল চালু
হোক বাংলাদেশে।
পেপাল
বাংলাদেশে চালু হলে তা
আমাদের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি
(আইসিটি) খাতের আর্থিক লেনদেনের
ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন
আনবে। এটি ফ্রিল্যান্সার,
তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও ই-কমার্স
খাতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ
লেনদেন মাধ্যম হতে পারে। ফ্রিল্যান্সাররা দ্রুত,
সহজ এবং নিরাপদ উপায়ে
আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের কাছ থেকে পারিশ্রমিক
গ্রহণ করতে পারবেন।
অন্যদিকে প্রযুক্তি উদ্যোক্তারা তাঁদের ডিজিটাল পণ্য
যেমন সফটওয়্যার, অ্যাপ, ই–বুক,
ডিজিটাল কোর্স, ডিজিটাল আর্ট
বা অনলাইন ভিডিও সেবা
সরাসরি বিদেশি ক্রেতার কাছে
বিক্রি করতে পারবেন এবং
সহজে পেমেন্ট নিতে পারবেন।
পেপ্যালের
বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতা আমাদের দেশে রেমিট্যান্স
প্রবাহ বাড়াবে
মো. মাসুম বিল্লাহ, ভূঁইয়াপ্রতিষ্ঠাতা
ও প্রধান নির্বাহী, জায়ান্ট
মার্কেটার্স, কুমিল্লা
আমাদের
ই-কমার্স খাত পেপ্যালের
মাধ্যমে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে
তাঁদের পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে
বিক্রি করে রপ্তানি আয়
বাড়াতে পারবে। পেপ্যালের
বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতা আমাদের দেশে রেমিট্যান্স
প্রবাহ বাড়াবে। এটি
দেশের অনলাইন ব্যবসা, লেনদেন
এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে আরও গতিশীল ও
কার্যকর করে তুলবে।
বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক
বাজারে দ্রুত ও কার্যকরভাবে
প্রবেশের জন্য পেপ্যালের বিকল্প
নেই।
আমরা যাঁরা ফ্রিল্যান্সিংয়ের সঙ্গে
যুক্ত তাঁরা যে যে
মার্কেটপ্লেসে কাজ করি, তাঁদের
সবার টাকা প্রদানের অন্যতম
মাধ্যম পেপ্যাল। পেপ্যালের
মতো অনেক বিকল্প লেনদেনের
মাধ্যম থাকলেও দেশের বাইরের
বেশির ভাগ গ্রাহক পেপ্যালে
লেনদেন করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। যে কারণে
পেপ্যাল আমাদের জন্য খুবই
প্রয়োজনীয়।
দেশে পেপ্যাল এলে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের
ব্যাপক প্রসার ঘটবে
রিফায়েত
রিফাত, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা,
দ্য সফটকিং লিমিটেড, ঢাকা
দেশে পেপ্যাল এলে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের
ব্যাপক প্রসার ঘটবে এবং
অনেক তরুণের স্বপ্ন পূরণে
সহযোগী হবে, সঙ্গে দেশে
বাড়বে তথ্যপ্রযুক্তি ও আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান। যা নতুন
বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবং হাজারো বেকার
যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার পাশাপাশি স্বপ্নপূরণের পথ আরও সহজরতর
হবে বলে আমি মনে
করি।
0 Comments